For Advertisement
৫০ বছরে আমরা কী পেলাম, প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ১৯৭১ সালে যে দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানসহ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী একসঙ্গে অংশ নিয়েছিলাম। সাম্যের বাংলাদেশ, ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ ও মানবিক বাংলাদেশ কায়েমে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম কিন্তু পরিশেষে আমরা কী পেলাম। তিনি আক্ষেপ করে বলেন- শোষণের পরিবর্তনে ৫০ বছরের আমরা কী পেলাম?
সোমবার বিকালে ঠাকুরগাঁওয়ের বিএনপি দলীয় কার্যালয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের আয়োজিত সদস্য সংগ্রহ অভিযান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের দেশ তথা ভারত উপমহাদেশের লোকেরাই ধর্ম নিয়ে খুব বাড়াবাড়ি করে। বিনা কারণেই করে- আমাদের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করে। শুধুমাত্র এটা রাজনীতিবিদদের একটা দুষ্টামি!
মনোরঞ্জন সিংয়ের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব এসএন তরুণ দে, যুগ্ম মহাসচিব মিল্টন বৈদ্য, জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান প্রমুখ।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সাধারণ আয়ের মানুষের আজ নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া। ধনীরা আজ আরও ধনী হচ্ছে। মুসলিম ধনীরা মালয়েশিয়া, কানাডাসহ বিদেশে টাকা পাচার করে বাড়ি তৈরি করছে। আর আপনাদের (হিন্দু ধনীরা) লোকেরা ভারতে টাকা পাচার করে সেখানে বাড়ি তৈরি করছে। আমরা গরিবরা দেশের মাটি কামড়িয়ে দেশেই আছি।
তিনি বিএনপির ঘরনা সংগঠন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টে যোগদানকারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, কী কারণে আপনারা এ সংগঠনে যোগ দিবেন। এ সময় রাণীশংকৈল উপজেলার কার্তিক চন্দ্র রায় ও সাবিত্রী রাণী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। তা থেকে মুক্তির জন্য এ সংগঠনে যোগদান করছেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার এক ছাত্রের কথা স্মরণ বলেন, আওয়ামী লীগের কাছে হিন্দুরা হচ্ছে বিয়ের পাগড়ির মতো; বিয়ের দিনে যেমন পাগড়ির দরকার হয়। বিয়ে শেষ হলে তা তুলে রাখা হয়।
তিনি বলেন, বিএনপি বুঝে না কে হিন্দু, কে মুসলিম আর কে খ্রিস্টান? বিএনপি মানুষকে মর্যাদা দেয়।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সদস্য সংগ্রহ অভিযান অনুষ্ঠানের আগে তিনি তার ঠাকুরগাঁওয়ের পৈতৃক বাসভবন চত্বরে আয়োজিত জেলা বিএনপির বর্ধিত সভার শুরুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে ৩০টির বেশি আসন পাবে না আওয়ামী লীগ।
পঞ্চগড়ে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ওপর হামলা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এ ঘটনার কারণে দেশের ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষুণ্ণ হয়েছে, পাশাপাশি সরকারের ভাবমূর্তি অনেক বেশি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। পঞ্চগড়ের ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে পূর্বপরিকল্পিতভাবে। দেশে এখন গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছে। এ আন্দোলন যখন পুরোপুরিভাবে বিস্ফোরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন সরকার পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটিয়ে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চায়। বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে চায়।
ঠাকুরগাঁওয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে বিএনপি মহাসচিব দলের বর্ধিত সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেন, ঠাকুরগাঁও পৌরসভার প্রথম নারী মেয়র ও কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সদস্য আঞ্জুমান আরা বেগম বন্যা অবৈধভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। আমি ছিলাম এই পৌরসভার চেয়ারম্যান। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের পৌরসভা এলাকায় সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করার নির্দেশ দেন। পৌর মেয়রকে বিএনপির মহাসচিব এর আগেও তাচ্ছিল্য করে বক্তব্য দেন।
তবে পৌর মেয়র ও কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সদস্য আঞ্জুমান আরা বেগম এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে বলেন, তিনি (মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর) একজন শিক্ষক ছিলেন। তার কাছে এ ধরনের হিংসাত্মক ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য আশা করা যায় না।
For Advertisement
পূর্বাকাশ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
© purbakash 2021
-Developed by WebsXplore
Comments: